গাজীপুর: ক্লিনিকগুলো নিয়ম মানতে বাধ্য, চ্যালেঞ্জ করা হবে প্রত্যেক ছাড়পত্র


স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর:
‘সরকারি দপ্তরগুলো চাইলে গাজীপুরের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ল্যাবগুলো নিয়ম মানতে বাধ্য’ এমনটাই জানিয়েছেন সম্প্রতি পরিবেশগত ছাড়পত্র বিহীন গাজীপুরের ২০৬ হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিটকারী ও গাজীপুর এনভাইরনমেন্ট জার্নালিস্টস এসোসিয়েশন’র প্রধান সমন্বয়ক মো. মেহেদী হাসান।

তিনি আরও জানান, ‘যুগ যুগ ধরে গাজীপুরের হাসপাতাল মালিকরা নিয়মের তোয়াক্কা না করে শুধু সিভিল সার্জনকে ম্যানেজ করেই প্রতিষ্ঠান চালাতো, পক্ষান্তরে পরিবেশ দূষণ ও অপ-চিকিৎসা চলত হরহামেসাই। কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়ম মানার চেষ্টা চালালে তাদেরকে নানান ভাবে হেয় করা হত। চিকিৎসা বর্জ্যর সঠিক ব্যবস্থাপনা ও হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন মানতে আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলে মহামান্য আদালতের চাপে হাসপাতাল মলিকরা পরিবেশগত ছাড়পত্র পেতে লাইন লাগিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর গাজীপুর জেলা কার্যালয়ে। অস্বাভাবিক হলেও অনেকে ছাড়পত্রও পাচ্ছেন।’

শোনা যাচ্ছে, উপযোগিতা ছাড়াই নাকি অনেক হাসপাতাল মালিকরা পরিবেশগত ছাড়পত্র পাচ্ছে, এ বিষয়ে আপনার করনীয় কি, এমন প্রশ্নের জবাবে মেহেদী জানান, ‘আমরাও পত্র পত্রিকায় দেখেছি উপযোগিতা নাই এমন হাসপাতালকে বিধিমালার বাইরে গিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র দিচ্ছেন। ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই, বিষয়টা উচ্চ আদালত অবজারবেশন করছেন, সবাইকে কৈফিয়ত দিতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে পত্রিকার কাটিংসহ অনিয়মে ছাড়পত্র দেয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট উচ্চ আদালতে একটি সাবলিমেন্টারি পিটিশন দায়েরও করেছি, প্রত্যেকটি ছাড়পত্রকে চ্যালেঞ্জ করা হবে।’

রিটকারী আইনজীবী মো: কাওসার হোসাইন জানান, ‘যেখানে উচ্চ আদালত রুল ইস্যু করেছেন, পরিবেশগত ছাড়পত্র বিহীন হাসপাতালগুলো বন্ধ করা হবে না কেন? সেখানে বিধি বহির্ভূত ছাড়পত্র প্রদান করে হাসপাতাল মালিকদের বাঁচিয়ে নেয়ার চেষ্টা সম্পূর্ণ আদালতের রুলের সাথে সাংঘর্ষিক; বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত হলে নিশ্চই আদালত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিবেন।’ এ বিষয়ে কথা বলতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার খায়রুজ্জামান জানান, ‘আদালতের রুল থাকার কারণে আমরা এবছর পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই এমন ক্লিনিক বা ল্যাবকে লাইসেন্স নবায়ন দিচ্ছিনা এবং পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

জানা গেছে, অবৈধ হয়ে পরা গাজীপুরের হাসপাতাল মালিকদের পক্ষে উচ্চ আদালতে সংশ্লিষ্ট রিটে বিবাদী হওয়ার আবেদন করেছেন বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের মহানগর শাখার পরিচয়দানকারী কাজীমউদ্দিন কাজী নামের এক হাসপাতাল মালিক। যার পরিচালিত জয়দেবপুরস্থ কে. কে. হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবটি সরকারী খাস জমিতে গড়ে ওঠার অভিযোগে সম্প্রতি গুড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

উল্লেখ্য: গত বছর ৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলার যেসব ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই সেগুলো বন্ধে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— সেগুলো জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের ৬০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছিল আদালত।